সালাতের সংজ্ঞা ও নবী-রাসূলগণের নিকট এর গুরুত্ব

সালাতের সংজ্ঞা:

শাব্দিক অর্থ: সালাতের শাব্দিক অর্থ দো‘আ, এ অর্থ কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে।আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَصَلِّعَلَيۡهِمۡۖإِنَّصَلَوٰتَكَسَكَنٞلَّهُمۡۗ١٠٣﴾ [التوبة: ١٠٣]

“তুমি তাদের জন্য দো‘আ কর, তোমার দো‘আ তাদের জন্য চিত্তস্বস্তিকর”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১০৩]

পারিভাষিক অর্থ:

এটি এমন এক ইবাদাত যা বিশেষ কিছু কথা ও কর্মকে শামিল করে, ‘আল্লাহু আকবার’ দ্বারা শুরু হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম’ দ্বারা শেষ হয়।

কথা থেকে উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহু আকবার বলা, ক্বিরাত, তাসবীহ ও দো‘আ ইত্যাদি পাঠ করা। কর্ম দ্বারা উদ্দেশ্য, ক্বিয়াম-দাঁড়ানো, রুকু করা, সাজদাহ করা ও বসা ইত্যাদি।

নবী ও রাসূলগণেরনিকট এর গুরুত্ব:

আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেরণের পূর্বের আসমানী দীনসমূহে সালাত বিধিবদ্ধ ছিল। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাঁর প্রভুর কাছে নিজের ও স্বীয় বংশধরের সালাত প্রতিষ্ঠার দো‘আ করেন।আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿رَبِّٱجۡعَلۡنِيمُقِيمَٱلصَّلَوٰةِوَمِنذُرِّيَّتِيۚ٤٠﴾ [ابراهيم: ٤٠]

“হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী কর এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও।” [সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ৪০]

আর ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তাঁর পরিবারকে সালাত প্রতিষ্ঠার আদেশ করেছিলেন।আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَكَانَيَأۡمُرُأَهۡلَهُۥبِٱلصَّلَوٰةِوَٱلزَّكَوٰةِ٥٥﴾ [مريم: ٥٥]

“সে তাঁর পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত”। [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৫]

আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালামকে সম্বোধন করে বলেন,

﴿إِنَّنِيٓأَنَاٱللَّهُلَآإِلَٰهَإِلَّآأَنَا۠فَٱعۡبُدۡنِيوَأَقِمِٱلصَّلَوٰةَلِذِكۡرِيٓ١٤﴾ [طه: ١٤]

“আমিই আল্লাহ, আমি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই। অতএব, আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর”। [সূরা ত্বা-হা, আয়াত: ১৪]

আল্লাহ তা‘আলা সালাত আদায়ের ব্যাপারে তাঁর নবী ঈসা আলাইহিস সালামকে আদেশ করেছেন।আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَجَعَلَنِيمُبَارَكًاأَيۡنَمَاكُنتُوَأَوۡصَٰنِيبِٱلصَّلَوٰةِوَٱلزَّكَوٰةِمَادُمۡتُحَيّٗا٣١﴾ [مريم: ٣١]

“যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে”। [সূরা মারইয়াম, আয়াত:৩১]

আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মি‘রাজ ও ইসরার রাত্রিতে আসমানে সালাত ফরয করেছেন। আর সালাত ফরয কালে পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা হালকা করে পাঁচ ওয়াক্ত করেছেন। যা আদায়ে পাঁচ ওয়াক্ত, কিন্তুসাওয়াবে পঞ্চাশ ওয়াক্ত। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত তা হলো, ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব ও ইশা, এর ওপর সকল মুসলিমদের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।